শনিবার, ডিসেম্বর ২১, ২০২৪
Homeসম্পাদকীয়নতুন আরেকটি অনলাইন পত্রিকার কথা ভাবতে হয়েছে যেসব কারণে

নতুন আরেকটি অনলাইন পত্রিকার কথা ভাবতে হয়েছে যেসব কারণে

কয়েক দিন আগে এক ফেসবুক বন্ধুর সাথে আমাদের ‘নারী অঙ্গন’ পত্রিকা নিয়ে আলাপ করতে গিয়ে শুরুতেই বন্ধুটি ২ টা কোটি টাকার প্রশ্ন রেখেছেন—
১. দেশে এরই মধ্যে নারীদের নিয়ে বেশ কয়েকটি জ্বলজ্যান্ত অনলাইন পত্রিকা বিরাজমান থাকার পরও, কেন আবার নতুন করে, একই ঘরানার আরেকটি পত্রিকার কথা ভাবছি আমরা?
২. কেন আমাদের বিশ্বাস করবে?

এই যে আমরা নারী বিষয়ক আরেকটি অনলাইন পত্রিকার যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছি, এর ভ্রুণ সৃষ্টির বহু আগে থেকেই বন্ধুটির রাখা প্রথম প্রশ্নটা, আমরা নিজেরা নিজেদের হাজার বার করেছি। কেন ওই পত্রিকাগুলোর সাথে যোগদান না করে, নারীদের জন্য আরেকটি নতুন পত্রিকার কথা ভাবা প্রয়োজন? অনেক কারণ রয়েছে। এখানে বিস্তারিত আলাপের সুযোগ নেই। তবে দুয়েকটার কথা না বললেই নয়।

বন্ধুটি পত্রিকাগুলোর যাত্রার শুরুতে কোন-না-কোনভাবে যুক্ত ছিলেন। ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলেই ডরায়। আর আমরা ঘরপোড়া না হয়েও সিঁদুরে মেঘে কোন আশার আলো দেখতে পাইনি এতোদিন। তাই তার করা প্রশ্ন দুটোকে আমাদের কাছে খুবই যৌক্তিক আর ন্যায়সঙ্গত বলে মনে হয়েছে।

বিদ্যমান নারী বিষয়ক পত্রিকাগুলো মূলত উচ্চ মধ্যবিত্ত এবং এলিট শ্রেণির নারীদের সিলেক্টিভ কিছু বিষয়ের উপরিতল নিয়ে অগভীর আলাপ দিতেই কেবল আগ্রহী। এর বাইরে যে বিপুল সংখ্যক শ্রমজীবী, কৃষাণী, গৃহিণী, প্রবাসী, গৃহকর্মী এবং অতি সাধারণ নারীরা রয়েছেন, তাদের দুঃখ-কষ্ট-আনন্দ-সংগ্রাম-জীবিকা-অধিকার-প্রাত্যহিক জীবন ইত্যাদি প্রায় অনুপস্থিত সেগুলোতে। অথচ আমাদের অর্থনীতি থেকে অপরাপর বিষয় দাঁড়িয়েই আছে মূলত তাদের শ্রম ও ঘামের উপর। আমাদের পত্রিকায় শ্রমিক শ্রেণির নারীদের জন্য (দিদিমণিদের রোজনামচা), কৃষাণীদের জন্য (কৃষাণীর সকাল-সন্ধ্যা), গৃহিণী বোনদের জন্য (হোমমেকার) আলাদা আলাদা ক্যাটাগরি রাখা হয়েছে খুবই গুরুত্বের সাথে।

নারী মুক্তির প্রশ্নটা বিচ্ছিন্ন কোন ব্যাপার নয়। আদিবাসী, দলিত, শ্রমিক, কৃষক ইত্যাদি অপরাপর শোষিত, নিপীড়িত শ্রেণির ও গোষ্ঠীর মুক্তির সাথেও জড়িত। জড়িত দেশের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক, দার্শনিক মুক্তির সাথেও। তাই আমাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, দার্শনিক বোঝাপড়াও পরিষ্কার হওয়া দরকার, যা আমাদের পত্রিকায় প্রাধান্য পাবে।

আর আমাদের বিশ্বাস করবেন কেন, নির্ভর করবেন কেন— সেই প্রশ্নের জবাবে আলাপ না বাড়িয়ে, আমরা আমাদের কাজের মধ্য দিয়েই জবাব দিতে চাই। যৌক্তিক, ন্যায়সঙ্গত যেকোন পরামর্শ, সমালোচনা আমরা মাথা পেতে নিবো। ‘নারী অঙ্গন’-এর সাথেই থাকুন।

আরো পড়ুন

6 COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সাম্প্রতিকা