সোমবার, এপ্রিল ৭, ২০২৫
Homeঅর্থকড়ির জগৎ'নারী অঙ্গন'-এর অনলাইন ক্যাম্পেইন যেজন্য

‘নারী অঙ্গন’-এর অনলাইন ক্যাম্পেইন যেজন্য

একদিকে একের পর গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে এবং হাজার হাজার শ্রমিক ছাটাই চলছে কারখানাগুলোতে, অপরদিকে ক্ষমতার পট পরিবর্তন এবং শূন্যতার সুযোগ নিয়ে সারাদেশে ধ//র্ষ//ণ, নারী নি//র্যা//ত//ন, নারীর উপর লৈঙ্গিক আধিপত্য বিস্তার, ট্যাগিং, নারীর নিরাপত্তাহীনতা প্রবল আকারে বেড়ে চলেছে। সবচেয়ে বড় আঘাত নেমে এসেছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে থাকা এবং পরবর্তীতেও সক্রিয় ভূমিকা রাখা প্রাগ্রসর নারীদের উপর। শ্রমিক ছাটাই এবং গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায়ও নারীরাই ভুক্তভোগী হচ্ছেন এবং হবেন বেশি। প্রথমত, গার্মেন্টস কারখানার বেশির ভাগ শ্রমিকই নারী, ফলে কর্মহীন হয়ে দুর্দশায় পড়ছেন তারা। আবার পুরুষ কর্মহীন হলে তারও ভুক্তভোগী পরোক্ষভাবে নারীও হোন। কয়েক দিন আগেও একজন নারী শ্রমিক অসুস্থ বোধ করায় ছুটি চেয়ে না পেয়ে সেই কারখানারই ছাদ থেকে লাফ দিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন। আজকেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে পোশাকের জন্য হেনস্থা করা এক ব্যক্তিকে সগৌরবে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনতে দেখলো পুরো জাতি। অব্যাহত গতিতে বেড়ে চলা দেশের, সেই সাথে নারীর এই নাজুক পরিস্থিতি আমাদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।

আমরা মনে করি, বিচারহীনতার সংস্কৃতির পাশাপাশি পুরুষতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, উৎপাদন কাঠামো, প্রশাসন, আমলাতন্ত্র, মানসিকতা, সর্বোপরি বিদ্যমান বৈষম্যমূলক উত্তরাধিকার আইন ও সম্পত্তির বিলিবণ্টন ব্যবস্থা নারীর বর্তমান অবস্থার জন্য অনেকাংশে দায়ী।

হাজার হাজার বছর ধরে চলে আসা পিতৃতান্ত্রিক ও বৈষম্যমূলক উত্তরাধিকার আইন পুরুষের কাছে সম্পত্তির পুঞ্জিভবন ঘটিয়ে পুরুষকে করেছে অপরিসীম ক্ষমতার অধিকারী। অপরদিকে নারীকে করেছে অনেকটাই পুরুষের উপর নির্ভরশীল ও ক্ষমতাহীন। সম্পত্তি ও ক্ষমতার এই ভারসাম্যহীনতাই ধ//র্ষ//ণ, নারী নিপীড়ন, লৈঙ্গিক আধিপত্য বিস্তার ইত্যাদির অন্যতম প্রধান কারণ বলে ‘নারী অঙ্গন’ মনে করে। তাছাড়া পুঁজিবাদী রাষ্ট্র ব্যবস্থায় নারী-পুরুষ উভয়ই যেহেতু নাগরিক এরং উভয়েরই সমান দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতি। তাই পারিবারিক সম্পত্তিতে নারীকে অধিকারহীন করে রাখা কিংবা অর্ধেক অধিকার দেওয়া সম্পূর্ণ অযৌক্তিক, অন্যায্য ও অন্যায় একটা বিধান— যা নারীর উপর সব রকম নিপীড়ন, নির্যাতন, আধিপত্য বিস্তারের ভিত্তি তৈরি করছে। তাছাড়া জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নারীরা নিজেদের জন্য পাওয়া কোটার সুবিধাকে অগ্রাহ্য করে সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপের লক্ষ্যে দলে দলে রাজপথে নেমে এসেছিল। সেজন্য ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক শ্রমজীবী নারী দিবসকে সামনে রেখে আমরা ধ//র্ষ//ণ ও নারী নিপীড়ন বন্ধে রাষ্ট্রের উদাসীনতা, বিচারহীনতার বিরুদ্ধে এবং পারিবারিক সম্পত্তিতে নারীর সমান অধিকারের দাবিতে একটা অনলাইন ক্যাম্পেইন পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আপনাদেরও আগামী ৮ মার্চ নিজ নিজ উদ্যোগে এই রকম অনলাইন ক্যাম্পেইন পরিচালনা করার আহবান করছি।

 

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সাম্প্রতিকা