‘নারীবাদী’, ‘নারী জাগরণের অগ্রদূত’, ‘নারী মুক্তির দিশারি’… বেগম রোকেয়ার নারী সংক্রান্ত ইত্যাদি ইত্যাদি তকমার আড়ালে রাজনীতি, অর্থনীতি, ইতিহাস সচেতন রোকেয়া যেন অনেকটা হারিয়ে গিয়েছেন। অথচ রোকেয়া ছিলেন মনে-প্রাণে উপনিবেশ ও সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী রাজনীতি, অর্থনীতি, ইতিহাস সচেতন একজন অগ্রণী ব্যক্তি। ১৯২১ সালে লেখা তাঁর ‘জ্ঞানফল’ নামক কল্পকাহিনীটি এর জ্বলন্ত উদাহরণ। এই লেখায় প্রচলিত ধারণার বাইরে অন্য এক রোকেয়ার পরিচয় পাই আমরা। এখানে রূপকথার আশ্রয় নিয়ে রোকেয়া প্রচলিত সমাজে নারীকে হীন করে দেখার দৃষ্টিভঙ্গিকে পুনঃনির্মাণ করেছেন। সেই সাথে দেখিয়েছেন ভারতবর্ষে ব্রিটিশ উপনিবেশ স্থাপন ও সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন, সভ্যতার গোড়াপত্তন করা নারীকে এর রূপ-রস থেকে বঞ্চিত করে দূরে রাখা এবং সবশেষে মানুষের মুক্তি তথা সামগ্রিক সমাজের মুক্তির উপায়।
রোকেয়া ‘জ্ঞানফল’-এর কাহিনী শুরু করেছেন প্রচলিত সমাজে পুরুষকে ‘শ্রেষ্ঠ’ আর নারীকে ‘সকল অনিষ্টের মূল’ হিসেবে দেখানোর যে অপচেষ্টা, এর বিপরীতে নতুন চিন্তা নিয়ে আসার মাধ্যমে। এজন্য তিনি বেছে নিয়েছেন সমাজে বহুল প্রচলিত আদম-হাভার পৃথিবীতে প্রেরণের কাহিনীকে। ইডেন উদ্যানে আদম ও হাভা সুখে-শান্তিতেই বসবাস করছিলেন। একদিন হাভা উদ্যানের সৌন্দর্য ঘুরে ঘুরে দেখার সময় অন্যমনস্ক হয়ে নিষিদ্ধ বৃক্ষের ফল খেয়ে ফেলেন। নিষিদ্ধ ফল খাওয়ার সাথে সাথে তাঁর মধ্যে জ্ঞানের উদয় হয়। তিনি বুঝতে পারেন, তাঁর শরীরে একটুকরো কাপড়ও নেই। তখন তাঁর মধ্যে জাগ্রত হয় লজ্জাবোধ। তৎক্ষণাৎ তিনি চুল দিয়ে সারা শরীর ঢেকে ফেলেন। এক অজানা ব্যথায় তাঁর হৃদয় ব্যথিত হয়ে ওঠে। সেই সময় সেখানে আদম এসে উপস্থিত হলে হাভা তাঁকে অবশিষ্ট ফলটুকু খাওয়ার জন্য অনুরোধ করে। ভুক্তাবশিষ্ট ফল খাওয়ার সাথে সাথে আদমেরও জ্ঞানোদয় হয়। তখন তারা নিজেদের দৈন্যদশা অনুভব করতে পারলেন। তাঁদের মধ্যে জ্ঞানের জাগ্রত অবস্থা স্পষ্ট হতে থাকে, সকল মোহ কেটে যায়।
এই কি স্বর্গ? প্রেমহীন, কর্মহীন, অলস জীবন- ইহাই স্বর্গসুখ?
এই কর্মহীন, অলস জীবনের পরিবর্তনের আশায় তারা ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। এসবের কোনো কিছুই ঈশ্বরের অবিদিত ছিল না। ঈশ্বর তাঁদের পৃথিবীতে প্রেরণ করলেন। পৃথিবীতে তাঁরা অভাব-স্বাচ্ছন্দ্য, রোগ-আরোগ্য, সুখ-দুঃখ প্রভৃতি নানান অবস্থার মধ্য দিয়ে প্রকৃত দাম্পত্য জীবন লাভ করলেন। রোকেয়া প্রচলিত সমাজের বদ্ধমূল ধারণার পুনঃনির্মাণ করে দেখিয়েছেন, নারী এখানে অনিষ্টকারী নয় বরং নিষিদ্ধ ফল খাওয়ার ফলে তাঁর মধ্যে আত্মসচেতনতাবোধ, আত্মমর্যাদাবোধ তৈরি হয়েছে। এখানে নারী পুরুষকে পাপে প্রলুব্ধ করেনি বরং তাকে জ্ঞান, চিন্তা ও কর্মে সক্রিয় করেছে। কর্মহীন, অলস জীবন থেকে মুক্তি দিয়ে প্রকৃত জীবন এনে দিয়েছে।
এরপর রোকেয়া এই গল্পের কাহিনীতে নিয়ে এসেছেন তখনকার ভারতবর্ষে ব্রিটিশদের উপনিবেশ স্থাপন ও ধন-সম্পদ লুণ্ঠনের বিষয়টি। নিপুণ সাহিত্যিক দক্ষতায় গল্পের পূর্বের অংশের সঙ্গে এর সামঞ্জস্য বজায় রেখে গল্প এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। গল্পে ‘কনক দ্বীপ’ দ্বারা তৎকালীন ভারতবর্ষ এবং ‘পরীস্থান’ দ্বারা ব্রিটিশদের জন্মভূমিকে চিত্রায়িত করেছেন। এই অংশে আমরা রোকেয়ার ইতিহাসবোধ, দেশ ও বিদেশের অর্থনীতি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান, রাজনীতি সচেতনতা ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার প্রকাশ দেখতে পাই।
প্রাক-ব্রিটিশ আমলে ভারতবর্ষ ছিলো আত্মনির্ভরশীল দেশ। ভারতের উর্বর ভূমিতে ফলতো নানান রঙের সুস্বাদু সব মশলা। এই মশলার ছিলো পুরো পৃথিবী জোড়া খ্যাতি। সমুদ্রপথে জাহাজ ভাসিয়ে নানান দেশের বণিকেরা আসতো মশলা কেনার জন্য। সেইসাথে তাদেরও কিছু পণ্য বিক্রি করতো স্থানীয় লোকজনদের কাছে। ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি রাণীর কাছ থেকে সনদ লাভ করার পর তারা ভারতবর্ষে বাণিজ্য করার পাশাপাশি রাজনীতিতে ঢুকে পড়তে থাকে। ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে জয় লাভের পর ব্রিটিশরা ভারতে প্রত্যক্ষভাবে ইংরেজ শাসন শুরু করে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাণিজ্যের নাম করে শুরু করে লুটপাট, ডাকাতি।
একইরূপে প্রতি বৎসর মাকাল বোঝাই জাহাজ লইয়া আসিত আর আম্রপূর্ণ জাহাজ লইয়া যাইত। ক্রমে বাণিজ্য বেশ পাকিয়া উঠিল। কিন্তু তাহাদের বাণিজ্যের শ্রীবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কনক দ্বীপে আম্রফলের দুর্ভিক্ষ হইতে লাগিল।
কৃষকদের জমিতে নামমাত্র মূল্যে বা জোর-জবরদস্তি করে কৃষিপণ্যের পরিবর্তে শিল্পের কাঁচামাল উৎপাদনে বাধ্য করা হতো। ভারতবর্ষ থেকে সম্পদ লুটপাট করে ইংল্যান্ডে পুঁজির ঘনীভবন করে তাদের শিল্পের বিকাশ ঘটায় ব্রিটিশরা। জ্ঞান-বিজ্ঞানে তারা উন্নত হয়ে ওঠে। ব্যবসা-বাণিজ্যের নাম করে ভারতবর্ষে ইউরোপীয়দের প্রবেশ, নানান অপকৌশলে ভারতবর্ষে তাদের প্রভাব বিস্তার, উপনিবেশ স্থাপন, সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন, ভারতবর্ষ থেকে সম্পদ পাচার, ভারতবর্ষের জনগণের খাদ্যের অভাব ও চরম ভোগান্তি, এই বিষয়গুলো রূপক আশ্রয়ে রোকেয়া এই গল্পে তুলে এনেছেন।
ইতোমধ্যে দুইশো বছর পার হয়ে গিয়েছে। ভারতবর্ষে (কনক দ্বীপে) দুর্ভিক্ষ হানা দিয়েছে। ঘরে ঘরে আর্তনাদ উঠেছে। পূর্বের মতো কৃষকের আর আনন্দ নেই, গোলাভরা ধান নেই, গোয়ালভরা গরু নেই, রাক্ষসী দুর্ভিক্ষ হানা দিয়েছে। হৃষ্টপুষ্ট দেহ এখন কঙ্কালসার হয়ে গিয়েছে, পরনে পরে আছে শত তালি দেয়া ছেঁড়া কাপড়। যে ভারতবর্ষ ছিলো কৃষিপণ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ রপ্তানিকারক দেশ, সেই ভারতবর্ষ হয়ে গিয়েছে আমদানিকারক দেশ।
কনকদ্বীপবাসীর আর কিছুই নাই; আছে কেবল মাকাল আর মাকাল!
ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ ও তার প্রভাবে তখনকার ভারতবর্ষে নিজস্ব সংস্কৃতির পরিবর্তে ইউরোপীয় সংস্কৃতির অনুকরণের বিষয়টিও গল্পে নিয়ে এসেছেন রোকেয়া। ব্যবসা-বাণিজ্যের নাম করে চুরি করা সম্পদ দিয়ে ব্রিটিশদের অবস্থার উন্নতি দেখে অনেক ভারতীয় নিজস্ব সংস্কৃতি বাদ দিয়ে তাদেরকে উন্নত জাতি হিসেবে ভাবতে শুরু করে, তাদের বেশভূষার অন্ধ অনুকরণ শুরু করে। হায় আফসোস!
এক সময় ভারববর্ষে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন দানা বাঁধতে থাকে। যদিও প্রথম দিকে ব্রিটিশরা এদেশে ইংরেজি শিক্ষা প্রচলনের ব্যাপারে আগ্রহী ছিল না। তবুও বাণিজ্য এবং একদল অনুগত শ্রেণি তৈরির লক্ষ্যে ইংরেজি শিক্ষা প্রচলন করে। ইংরেজি শিক্ষার মধ্য দিয়ে পাশ্চাত্যের জ্ঞান ভাণ্ডারের দরজা খুলে যায়। এদেশের তরুণরা ফরাসি বিপ্লব, আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধ প্রভৃতি বিষয়ে জানতে পারে। ভারতে একদল শিক্ষিত প্রগতিশীল মধ্যবিত্ত শ্রেণির উদ্ভব হয়। যা তাদের মধ্যে জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষ ঘটায়। এবং পরবর্তীতে ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রামে ব্রতী করে তোলে।
কনকদ্বীপবাসী দুই চারি জন ভাগ্যবান ব্যক্তি পরীস্থান হইতে আনীত পেয়ারা ভক্ষণ করিয়া তাহার বীজ ফেলিয়া দিলেন। সেই বীজে কনকদ্বীপেও পেয়ারা গাছ হইল।
ভারতবর্ষে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন দাবানলের মতো চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। সর্বশক্তি প্রয়োগ করে নির্মমভাবে সেই আন্দোলনকে দমন করার বিষয়গুলোও ফুটিয়ে তুলেছেন রোকেয়া। ‘তখন কনক দ্বীপে ভয়ানক হৈ চৈ পড়িয়া গেল, শান্তিপূর্ণ দেশটির দিকে দিকে অশান্তি-অনল’ জ্বলে উঠলো।
পেয়ারা তরুর মূলে শত শত শাণিত কুঠারের আঘাত পড়িতে লাগিল।
এই অশান্তি, দুর্দশা, দুরাবস্থা থেকে কি মুক্তির কোন উপায় নেই? সমাজে আগের সেই স্বস্তির শান্তির পরিবেশ কি ফিরে আসবে না? অবশ্যই এই দুরাবস্থা থেকে মানুষের মুক্তির উপায় আছে, সমাজে শান্তির পরিবেশও ফিরে আসবে। বহু অনুসন্ধানে জানা যায়, এই দুরাবস্থা থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় জ্ঞানফল। এই দেশের অদূরদর্শী স্বার্থপর পণ্ডিত মূর্খেরা নারীদেরকে জ্ঞানফল থেকে বঞ্চিত করেছে। কালক্রমে এই বঞ্চনা সামাজিক বিধানরূপে পরিগণিত হয়েছে। ফলে নারীর আন্তরিক ভালোবাসা যত্নের অভাবে জ্ঞানবৃক্ষ মরে গিয়েছে। দেশে নেমে এসেছে অন্ধকার, বিভেদ, বিচ্ছিন্নতা, নারীর আনিত ফল থেকে নারীকে বঞ্চিত করে পরাধীন করে রাখার প্রবণতা।
হাজার হাজার বছর আগে কৃষির আবিষ্কার করেছিল নারী, যার মধ্য দিয়ে মানবজাতি সভ্যতার গোড়াপত্তন করেছিল। মানুষ যাযাবর জীবন থেকে কোন একটা নির্দিষ্ট অঞ্চলে স্থায়ীভাবে বসবাস করা শুরু করেছিল। এরপর পশুকে পোষ মানানো থেকে শুরু করে একের পর এক যন্ত্রপাতি বানানো রপ্ত করে নেয়। কৃষির বিকাশ উদ্বৃত্ত সম্পত্তির সৃষ্টি করে। এর চূড়ান্ত ফলাফল ছিল ব্যক্তিগত সম্পত্তির উৎপত্তি এবং কৃষির আবিষ্কারক নারীকেই কৃষি এবং সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত করে প্রকারান্তরে নারীকে কেবল সন্তান উৎপাদনের যন্ত্র এবং সম্পত্তিতে পরিণত করা। ইতিহাসের এই ছায়া আমরা ‘জ্ঞানফল’ কল্পকাহিনীটিতে দেখতে পাই জ্ঞানফলের সন্ধানদাতা নারীকেই জ্ঞানফলের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার ঘটনায়।
নারীর আনীত জ্ঞানফল থেকে নারীকে বঞ্চিত করে গৃহকোণে বন্দী করে কেবল সন্তান জন্মদান এবং লালন-পালনে সীমাবদ্ধ করে রাখলে দেশ ও জাতিকে কী পরিনতি বরণ করে নিতে হয়, কনকদ্বীপের পরিণামের মধ্য দিয়ে বেগম রোকেয়া দেখিয়েছেন। নারীকে শিক্ষা থেকে, সম্পত্তির অধিকার থেকে, পুরুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার অধিকার থেকে বঞ্চিত করার ফলাফল কখনো ভালো হতে পারে না, যা আমরা প্রতিদিন আমাদের দেশে, সমাজেও দেখতে পাচ্ছি।
সাবধান! আর কন্যাজাতিকে পেয়ারায় বঞ্চিত করিও না! নারীর আনিত জ্ঞানফলে নারীর সম্পূর্ণ অধিকার আছে, একথা অবশ্য স্মরণ রাখিবে।
১৯২১ সালে লিখিত এই গল্পে রূপক আশ্রয়ে বেগম রোকেয়া যখন মানুষের তথা সমগ্র মানব সমাজের মুক্তির উপায় দেখিয়েছেন, তখন খোদ ভারতবর্ষে ব্রিটিশ উপনিবেশ জীবন্ত ছিল। একশো বছরের বেশি সময় আগে অবরুদ্ধ সমাজে বসে বেগম রোকেয়ার যেরকম পড়াশোনা, সাম্য-চিন্তা, সমাজকে দেখার অন্তর্দৃষ্টি, ইতিহাসবোধ, রাজনীতি সচেতনতা, রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, সাহিত্যিক ক্ষমতা ও কৌশল ছিলো, তা আজকের দিনে আমাদের আধুনিক সমাজের স্বাধীন (?) নারীদের মধ্যেও কমই খুঁজে পাওয়া যায়।
গত একশো বছরে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র কাঠামোর নানান পরিবর্তন ঘটেছে। উপনিবেশগুলোর বিলুপ্তি ঘটেছে, নারীর আগের সেই অবরুদ্ধ অবস্থা নেই, জ্ঞান-বিজ্ঞানে পৃথিবী অনেক এগিয়েছে। তবুও কি আমাদের সত্যিকার মুক্তি ঘটেছে? না, ঘটেনি। আমাদের অবরুদ্ধ অবস্থা এখনো কাটেনি। নারীর বন্দী-দশার রূপান্তর ঘটেছে, সাম্রাজ্যবাদ নতুন রূপ ধারণ করেছে। এখনো পুঁজিবাদ নানান অপকৌশলে নারীকে একটা ফ্রেমে আটকে রাখতে চায়, বেঁধে রাখতে চায়। নারীর আনীত জ্ঞানফল হতে নারীকে বঞ্চিত করতে চায়। এতে করে শুধু নারী একাই বঞ্চিত হচ্ছে না, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কিন্তু আমরা সেই জ্ঞানবৃক্ষকে মরতে দিতে পারি না। নারী-পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সেই জ্ঞানবৃক্ষের স্পিরিটকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে, যেই জ্ঞানবৃক্ষ আমাদেরকে মিথ্যা মোহ কাটিয়ে আত্মসচেতন করে তোলে, মানুষকে প্রকৃত জীবন দান করে, সভ্যতার গোড়াপত্তন করে।